মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': খোকার বাসায় পুলিশ

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': খোকার বাসায় পুলিশ ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার গোপীবাগের বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আজ মঙ্গলবার পুলিশের এই অভিযান চলাকালে খোকা বাসায় ছিলেন না। এর আগে সোমবার তার গুলশানের বাসায়ও অভিযান চালায় পুলিশ। মহানগর বিএনপির একাধিক সূত্রে এই খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ব্যাপারে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মেহেদী হাসান জানান, খোকার বাড়িতে পুলিশ নয়, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা গিয়েছিলেন। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সোমবার বিকালে মাওলানা ভাসানি মিলনায়তনে সাদেক হোসেন খোকার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাত ১০টায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম তার গুলশানের বাড়িতে যায়। তবে ঐ সময় খোকা বাসায় ছিলেন না। পরে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি টিম খোকার গোপীবাগের বাসায় যায়। এ সময়ও তাকে খুঁজে পায়নি পুলিশ। সোমবার বিকালে দলের এক সভায় ২৫ অক্টোবর সরকারি দলের যে কোনো হামলা মোকাবেলায় দলীয় কর্মীদের দা-কুড়াল নিয়ে প্রস্তত থাকতে বলেন খোকা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন শাখার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, খোকার গোপীবাগের বাড়িতে আজ সকালে পুলিশ গিয়েছিল। তবে তাকে পাওয়া যায়নি।

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': পবিত্র ঈদুল আজহায় মোহাম্মদ সোহরাব আজিজের নগন্য উপহার: আমিনা সর্বনাশী

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': পবিত্র ঈদুল আজহায় মোহাম্মদ সোহরাব আজিজের নগন্য উপহার: আমিনা সর্বনাশী মেঘনা সর্বনাশী উত্সর্গ হুমায়ুন কবির http://khu.music.s3.amazonaws.com/usersong_4fc3be46e0383.mp3

সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': আলিবাবা সিক্সপ্যাক আনলিমিটেড পরিবেশন: 'বাংলার বাংলার বিরহী গান' 'প্রেমের মায়াজাল'

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': আলিবাবা সিক্সপ্যাক আনলিমিটেড পরিবেশন: 'বাংলার বাংলার বিরহী গান' 'প্রেমের মায়াজাল' ১ আমায় এত দুঃক্ষ দিলি বন্ধুরে: বাউল লেয়কত ওলি ২ আমি কি তোর আপন ছিলাম নারে জোরিনা: মেজর হাফইজ অবসর ৩ তোমার লাগিয়ারে সদাই প্রাণ আমার কান্দে বন্ধুরে: গঞ্জের খৈয়াম ছাহেব ৪ তোমারো লাগিয়া পরান আমার কান্দে :আজিজ রেজাকার? ৫ ওহ সাজনা আমার প্রিয়া সাজনা: আজিজ রেজাকার? ৬ আমার সোনার ময়না পাখি: বাউল লেয়কত ওলি ৭ তুই যাইবা সোনাদিয়া বন্ধু মাছ মরিবার লাই:মেজর হাফইজ অবসর ৮ শাম কালিয়া সোনা বন্ধুরে নীরলে তোমারে পাইলাম না: গঞ্জের খৈয়াম ছাহেব 'ঢোল তবলা বাঁশির পিরিতের ফাঁসি' বাংলাদেশের সব মানুষের তরে উত্সর্গ

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': আজ পবিত্র হজ্জ:

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': আজ পবিত্র হজ্জ: : “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শরীকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়ান নিয়মাতা লাকা ওয়াল মুলক। লা শারীকা লাক্।” লাখ লাখ কণ্ঠের এই ধ্বনীতে আজ সোমবার মুখরিত হয়ে উঠবে আরাফাত ময়দান। বিঘোষিত হবে মহান আল্লাহর একত্ব ও মহত্ত্বের কথা। কাফনের কাপড়ের মতো সাদা দু’টুকরো ইহরামের কাপড় পরে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যলাভের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়বে আল্লাহর বান্দাহগণ। সৌদীআরবের গ্র্যান্ড ইমাম হাজীদের উদ্দেশে খুতবা প্রদান করবেন। আল্লাহ তায়ালা এবং বান্দার মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের অনন্য আবহে বিরাজ করবে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও ভ্রাতৃত্বের এক অনুপম দৃশ্য। ফজরের নামাজ মিনায় আদায় করার পর হাজীগন ইহরাম বাঁধা অবস্থায় আরাফাত ময়দানে এসে অবস্থান গ্রহণ করবেন। এই আরাফাতের ময়দানে দাঁড়িয়েই সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগে বিদায় হজ্জের ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। লাখো মানুষের উদ্দেশে প্রদত্ত এই ভাষণের পর আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছিল দ্বীনের পরিপূর্ণতা লাভের। আজো সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ভাষণ দেয়া হয়। ভাষনে গোটা বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। মুসলিম উম্মাহ শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। আর হাজীগণ এক আবেগঘন পরিবেশে মহান আল্লাহর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেয়ার মন-মানসিকতা নিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। তারা নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, নিজের পরিবার পরিজন, সমাজ ও রাষ্ট্রের সুখ শান্তির জন্য আল্লাহর জন্য দোয়া করেন। সৌদি আরবে আজ ৯ জিলহজ্জ। আজ ফজরের নামায মিনায় আদায় করার আরাফার ময়দানে হাজীগণ অবস্থান করবেন। এখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকতে হবে। সূর্যাস্তের পর মুযদালিফার উদ্দেশ্যে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন এবং মুযদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশা’র নামায এশা'র ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সমস্ত রাত অবস্থান করবেন। মিনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। মুযদালিফায় ফজরের নামায পড়ে মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। পবিত্র মক্কা থেকে প্রায় ৯ মাইল পূর্বদিকে একটি পাহাড়ের নাম ‘জাবালুর রহমত’ বা করুণার পাহাড়। এই পাহাড় সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রলম্বিত বিরাট প্রান্তরটি আরাফাত প্রান্তর নামে পরিচিত। পাহাড়টি মধ্যম আকৃতির এবং গ্রানাইট শিলা দ্বারা গঠিত। এর উচ্চতা প্রায় ২০০ ফুট। এই পাহাড়ের পূর্বদিকে প্রস্তরের সিঁড়ি রয়েছে। এর ষষ্ঠ ধাপের উচ্চতা বরাবর আগে একটি উন্নত মঞ্চ ও একটি মিম্বর ছিল। এই মিম্বরে দাঁড়িয়ে প্রতি বছর ৯ জিলহজ্জ আরাফার দিন ইমাম সাহেব খুতবা প্রদান করতেন। এখন আর সেই মঞ্চ ও মিম্বার নেই এবং এখান হতে হজ্জের খুতবাও প্রদান করা হয় না। বরং এখন খুতবা দেয়া হয় মসজিদে নামিরা হতে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর মাত্র ১ দিন হাজীরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করেন। তখন তাদের পরনে থাকে কাফনের কাপড়ের মতো সেলাইবিহীন সাদা দুই টুকরো কাপড়। হাজীরা আরাফারাতের ময়দানে অবস্থানকালে উচ্চস্বরে লাব্বাইকা পাঠ করেন, যদি সম্ভব হয় হজ্জের খুতবা শ্রবণ করেন। যোহর ও আছরের নামায একত্রে এবং মাগরিব ও এশা’র নামাযও একত্রে আদায় করেন, রোযা রাখেন, আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করেন, কুরআন তেলাওয়াত, দরূদ ও সালাম প্রেরণ এবং ইহ ও পরকালের কল্যাণ কামনায় অবস্থানকালটি অতিবাহিত করেন। হযরত আবদুর রহমান বিন ইয়ামার আদ-দায়লি (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আরাফাই তো হজ্জ।” ইমাম শাওকানী (রহ.) এ কথার ব্যাখ্যায় বলেছেন, “যে ব্যক্তি আরাফাতে অবস্থানের জন্য নির্দিষ্ট দিনে উক্ত ময়দানে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য অর্জন করল তার হজ্জ হয়ে গেল।” ইমাম তিরমিযী (রহ.) এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “আরাফাত ময়দানে অবস্থান করার ভাগ্য যার হয়নি তার হজ্জ বাতিল হয়ে যাবে।”

শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': :আব্দুল আলীমের আমরণ কারাদন্ড:


দৈনিক আজিজ:
'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':
:আব্দুল আলীমের আমরণ  কারাদন্ড:

সাবেক মন্ত্রী ও প্রবীণ রাজনীতিবীদ আব্দুল আলীমকে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদন্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আসামির উপস্থিতিতে জনাকীর্ণ বিচারকক্ষে গতকাল বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাপ্য হলেও বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে ৮৩ বছর বয়সি প্রবীণ এ রাজনীতিবিদকে এই দন্ড- প্রদান করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনা ১৭টি অভিযোগের মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে নয়টি। প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি আটটি অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়েছে আসামিকে। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছে আসামিপক্ষ। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এটিই অষ্টম এবং বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লি¬ষ্ট কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় রায়। ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্য পর্যায়ক্রমে পাঠ করেন ইংরেজিতে লিখিত ১৯১ পৃষ্ঠা রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ। ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় রায় ঘোষণা উপলক্ষে। 
ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান রায়ে বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৭টি অভিযোগের মধ্যে নয়টি ঘটনায় আলীমের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ঘটনায় আলীম যেভাবে গণহত্যা ও হত্যাদন্ড ঘটিয়েছেন অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ। কোনো মানুষ, যে ফিজিকালি ও মেন্টালি আনফিট, তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো উচিৎ নয়।  কিন্তু আব্দুল আলীমের অপরাধ এতোটাই ঘৃণ্য, তাকে মুক্ত রাখলে মানবতার অবমাননা হবে। এ কারণে তাকে কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে বাকি জীবন কাটাতে হবে। তাহলে হয়তো কৃতকর্মের জন্য তার ভেতরে অনুশোচনার সৃষ্টি হবে।
এদিকে রায়ের পর আব্দুল আলীমের আইনজীবী আহসানুল হক হেনা বলেছেন, আমরা আপিল করব। এ মামলার শুনানিতে আসামিপক্ষ দাবি করেছিলো, প্রসিকিউশন যেসব স্থানে যেসব ঘটনায় আলীমের জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে, সেখানে সে সময় তিনি উপস্থিতই ছিলেন না।  কিন্তু রায়ে বিচারক বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ওই দাবি প্রমাণ করতে পারেনি। এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আহসানুল হক বলেন, ‘নো কমেন্টস’। অপরদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় এ মামলায় ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত বলেন, আদালতের রায় আমাদের মানতে হবে। আমরা অবনত মস্তকে মেনে নিচ্ছি। তবে দেশবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী রায় হলে আমাদেরও ভালো লাগতো। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার বিষয়ে তিনি বলেন, রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি হাতে পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে কোনো গ্রাউন্ড পাওয়া গেলে আপিল করবো। রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও আপিলের বিষয়ে একই কথা বলেছেন। প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, আব্দুল আলিম যে যুদ্বাপরাধী তা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। আদালত তার শারীরিক অক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনা করে আমৃত্যু কারাদ- দিয়েছে। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে এ প্রসিকিউটর বলেন, আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে বিচারহীনতার রেওয়াজ বিলুপ্ত হবে।
প্রথম কার্যক্রম :
গতকাল সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে এজলাসে আসন গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্য। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ডান পাশে ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ সদস্য বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং কনিষ্ঠ সদস্য বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম আসন গ্রহণ করেন বাঁ পাশে। মূল রায়ের পাঠ শুরু হয় এরপরে। ৬৮৮ অনুচ্ছেদ সংবলিত রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ থেকে প্রথমে পাঠ করেন বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম। ১০টা ৫৪ মিনিটে রায় পড়া শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে। বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম রায় পড়েন বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। এরপর রায় পড়া শুরু করে ১২টা ৮ মিনিটে তা শেষ করেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া। আর শেষ অংশের পাঠ শুরু করে চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান  দন্ড ঘোষণার পর রায় দেওয়া শেষ করেন বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে। রায় ঘোষণার পর সঙ্গে সঙ্গে এজলাস ত্যাগ করেন ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্য। দন্ড শুনে কোন মন্তব্য করেননি আবদুল আলীম। রায় ঘোষণা উপলক্ষে এর আগে সকাল পৌনে দশটার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় আনা হয় আলীমকে। হাজতখানা থেকে কাঠগড়ায় নেওয়া হয় ১০টা ৩৫ মিনিটে। 
বিচারকক্ষ: 
এজলাস সামনে রেখে ডান পাশে প্রসিকিউটররা আসন গ্রহণ করেন প্রসিকিউশনের জন্য নির্ধারিত স্থানে। বাঁ পাশে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল হক ও অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম প্রমুখ। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম, চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু, সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট এম কে রহমান, প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী, অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুম ও ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ প্রমুখ। ছিলেন ছেলে সাজ্জাদ বিন আলীম এবং খালিদ বিন আলীমও। আর স্ট্রেচারে ভর করে কাঠগড়ার চেয়ারে ছিলেন আবদুল আলীম। এ ছাড়া গণমাধ্যম কর্মীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়।
প্রমাণিত নয়টি অভিযোগ: 
ট্রাইব্যুনালে ১৭টি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আবদুল আলীমের বিচার শুরু হয় ২০১২ সালের ১১ জুন। অভিযোগের মধ্যে ছিল, গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুট ও অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অপরাধ। ট্রাইব্যুনালের রায়ে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম, দ্বাদশ ও চতুর্দশ অভিযোগ। এর মধ্যে প্রমাণিত দ্বিতীয়, অষ্টম, দশম ও চতুর্দশ অভিযোগে আমৃত্যু কারাদন্ড দেওয়া হয় আলীমকে। আর ষষ্ঠ, সপ্তম, নবম ও দ্বাদশ অভিযোগে ২০ বছর করে এবং প্রথম অভিযোগে দশ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয় আসামিকে। তবে প্রমাণিত না হওয়ায় আলীমকে খালাস দেওয়া হয় বাকি সব অভিযোগ থেকে। এর মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম অভিযোগের সমর্থনে সাক্ষী হাজির করতে পারেনি প্রসিকিউশন। 
প্রথম অভিযোগ অনুসারে, ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল আলীমের নেতৃত্বে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার দমদমা গ্রামের মেহেরউদ্দিন চৌধুরীর বাড়িতে হামলা চালায় রাজাকার বাহিনী। ঘটনার পর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য হন মেহেরউদ্দিন। দ্বিতীয় অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল জয়পুরহাটের কড়ইকাদিপুর এলাকার চকপাড়া, সোনার পাড়া, পালপাড়া ও যুগীপাড়ার হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামের মোট ৩৭০ জনকে গুলি করে হত্যা করে আলীমের নেতৃত্বাধীন রাজাকার বাহিনীসহ পাকিস্তানি সেনারা। ষষ্ঠ অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের মে মাসের প্রথম দিকে আটক করা হয় আক্কেলপুরের দশজনকে। তাদের ‘শেষ করে দেওয়া’র নির্দেশ দেন আলীম। পরে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেওয়া হলে হত্যা করা হয় নয়জনকে। তাদের মধ্য থেকে পালিয়ে বাঁচতে সক্ষম হন মোফাজ্জল নামের এক ব্যক্তি। সপ্তম অভিযোগ বলছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মে অপহরণের পর আলীমের পরামর্শ ও প্ররোচনায় গুলি করে হত্যা করা হয় নওদা গ্রামের চার জনকে। অষ্টম অভিযোগ অনুযায়ী, একাত্তরের মে মাসের শেষের দিকে আলীমের নির্দেশে হত্যা করা হয় বাদল, সচীন ওরফে ভানু, প্রবাস চন্দ্র শীল, মনিভূষণ চক্রবর্তী, কার্তিক চন্দ্র বর্মণ, নিমাই চন্দ্র বর্মণ ও প্রিয়নাথ বর্মণসহ অপরিচিত আরও তিন জনকে। নবম অভিযোগ হচ্ছে, ১৯৭১ সালের ১৪ জুন জয়পুরহাটের আক্কেলপুর হয়ে ভারতে যাওয়ার পথে শান্তি কমিটির লোকজনের হাতে ধরা পড়েন বগুড়ার খোকন পাইকারসহ ১৫ যুবক। এরপর তাদের হাত-পা বেঁধে নির্যাতন শেষে হত্যা করা হয় আলীমের নির্দেশে। দশম অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের জুন মাসের শেষের দিকে জয়পুরহাটের সদর রোডের শাওনলাল বাজলার গদিঘরে শান্তি কমিটির অফিসে বসে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ সন্দেহে পাহাড়পুর থেকে ধরে আনা ২৬ যুবককে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন আলীম। পরে গুলি করে হত্যা করা হয় ওই ২৬ যুবককে। দ্বাদশ অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৪ জুলাই অপহরণের পর ব্যাপক নির্যাতন শেষে আলীমের নির্দেশে ডাক্তার আবুল কাশেমকে গুলি করে হত্যা করা হয় ২৬ জুলাই। চতুর্দশ অভিযোগে বলা হয়, আক্কেলুপুর সদরের ফজলুল করিম ও অন্য দুজনকে আলীমের নির্দেশে মুখে চুনকালি মাখিয়ে জয়পৃরহাট শহর প্রদক্ষিণ করানো হয় ১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর। পরে তাদের হত্যা করা হয় গুলি করে। 
যেসব অভিযোগে খালাস:
তৃতীয় অভিযোগ অনুযায়ী, আবদুল আলীমের পরামর্শ ও প্ররোচনা এবং চিরোলা গ্রামের শান্তি কমিটির সদস্য রিয়াজ মৃধার সহাযোগিতায় পাকিস্তানি সেনারা ২৮ জনকে বেঁধে গুলি করে একাত্তরের আষাঢ় মাসের প্রথম সপ্তাহে। এতে নিহত হন ২২ জন। ছয়জন বেঁচে যান প্রাণে। চতুর্থ অভিযোগ থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে একদিন পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে আলীম নামেন পাঁচবিবি বকুলতলা রেললাইনের কাছে। এরপর বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে কোকতারা, বাগজানা ও কুটাহারা গ্রামে হানা দিয়ে বাড়িঘরে লুটপাট চালানো হয় এবং ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। সেখানে গুলি করে হত্যা করা হয় ১৯ জনকে। পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের বৈশাখ মাসের শেষ দিকে জয়পুরহাটের দক্ষিণ পাহুনন্দা মিশন স্কুলে আলীমের নির্দেশ ও প্ররোচনায় হত্যা করা হয় ৬৭ জন হিন্দুকে। একাদশ অভিযোগ অনুসারে, মুক্তিযুদ্ধের সময় জুন মাসের শেষের দিকে কয়েকজন গাড়োয়াল এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ আটক করা হয় ২৬ জনকে। এরপর গুলি হত্যা করে তাদের লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয় আলীমের নির্দেশে। ত্রয়োদশ অভিযোগ থেকে বলা হয়, একাত্তরের সেপ্টেম্বরে আলীমের নির্দেশ ও পরামর্শে পাকিস্তানি সেনারা গুলি করে হত্যা করে ১১ যুবককে। পঞ্চদশ অভিযোগ হচ্ছে, ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর ২৫ জনকে পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে নেওয়া হয় আলীমের নির্দেশে। পরে তাদের হত্যা করা হয়। ষোড়শ অভিযোগ বলছে, একাত্তরে আক্কেলপুরের বিভিন্ন স্থানে উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যদের মানবতাবিরোধী অপরাধে উৎসাহিত করেন আলীম। সপ্তদশ অভিযোগ হচ্ছে, রাজাকাররা আলীমের নির্দেশে হত্যা করে চট্টগ্রামের কালুরঘাটের ১৭ উইংয়ের ইপিআর সুবেদার মেজর জব্বল হোসেনকে।  
আপিল প্রসঙ্গ: 
ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা পক্ষ। সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে ৩০ দিনের মধ্যে করতে হবে এ আবেদন। আপিল নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে। 
নিরাপত্তা বেষ্টনী:
আলীমের বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণা উপলক্ষে ট্রাইব্যুনাল-সংলগ্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয় কড়া নিরাপত্তা-বেষ্টনী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যের পাশাপাশি বাড়ানো হয় সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি। পরিচয় নিশ্চিত করে সংশ্লি¬ষ্টদের কড়া নিরাপত্তায় প্রবেশ করানো হয় ট্রাইব্যুনালে।  
বিচার কার্যক্রম:
২০১১ সালের ২৭ মার্চ আবদুল আলীম গ্রেপ্তার হন। এক লাখ টাকা মুচলেকা এবং ছেলের জিম্মায় পরে জামিন নেন তিনি। পরে বেশ কয়েকদফা বাড়ানো হয় এ জামিনের মেয়াদ। ২০১২ সালের ১১ জুন তার বিচার শুরু হয় ১৭ অভিযোগে। এর আগে ২০১২ সালের ১৫ মার্চ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে প্রসিকিউশন। অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল-১। মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করা হয় ১৬ এপ্রিল। গত ৪ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর এবং ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচ কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ ও রানা দাশ গুপ্ত। অন্যদিকে গত ১৫ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর এবং ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় কার্যদিবস আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী আহসানুল হক, তাজুল ইসলাম ও আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান। ২৭ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আলীমের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন তিন জন। অন্যদিকে গত বছরের ৬ আগস্ট থেকে এ বছরের ২২ আগস্ট পর্যন্ত প্রসিকিউশনের পক্ষে তদন্ত কর্মকর্তাসহ সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩৫ জন। তবে ১৯তম সাক্ষী প্রসিকিউশন বৈরী ঘোষণা করে জেরা করেছে আবেদ হোসেনকে। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া দুই জনের জবানবন্দিকে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের অন্য সব রায়:
গত ২১ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য আবুল কালাম আযাদকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। আর ৫ ফেব্র–য়ারি দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্ল¬াকে একই ট্রাইব্যুনাল দেন যাবজ্জীবন কারাদ-। অন্যদিকে ট্রাইব্যুনাল-১ দলের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদ- দেন ২৮ ফেব্রুয়ারি। ট্রাইব্যুনালের চতুর্থ রায়ে একই দলের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকেও দেওয়া হয় মৃত্যুদ-। ১৫ জুলাই পঞ্চম রায়ে দলের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদ- দেন ট্রাইব্যুনাল। দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয় ১৭ জুলাই। ১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদ- দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে।

মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': 'ছয়ফল' বড় ভালো লোক ছিলেন: ফুলবাড়ীতে ১৬ বছর আগের মৃত ব্যক্তির অক্ষত লাশ উদ্ধার:



দৈনিক আজিজ:
'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':
'ছয়ফল' বড় ভালো লোক ছিলেন:
ফুলবাড়ীতে ১৬ বছর আগের মৃত ব্যক্তির অক্ষত লাশ উদ্ধার:

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের চর মেকলী গ্রামে ১৬ বছর আগের মৃত ব্যক্তির কাফন পরা অক্ষত লাশ উদ্ধার হয়েছে। ওই মৃত ব্যক্তির নাম ছয়ফল মিঞা। তার বাড়ি চর মেকলী গ্রামে। লাশটি দেখার জন্য ওই গ্রামে উত্সুক জনতার ভিড় পড়ে যায়। 
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ১৫/১৬ বছর আগে চর মেকলী গ্রামের ছয়ফল মিঞা মারা যান । তাকে দাফন করা হয় তার পারিবারিক কবর স্থানে। দাফনের ৮/১০ বছর পর ওই গ্রামে ধরলা নদীর ভাঙন দেখা দিলে কবর ভেঙে তার অর্ধেক লাশ বের হয়। বিষয়টি ছয়ফলের পরিবার না জানলেও স্বপ্নে তার পরিবারকে জানাতে পারে। পরিবারের লোকজন স্বপ্ন দেখে কবরের পাশে গেলে লাশের সন্ধান পায়। সে সময় তার অক্ষত কাফন পরা লাশটি অন্যত্র দাফন করে তার পরিবার। কিন্তু সর্বগ্রাসী ধরলা নদী পিছু ছাড়েনি ছয়ফলের কবর। গত কয়দিন ধরে চর মেকলী গ্রামে ধরলা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিলে ছয়ফলের কবর আবারও ভাঙনের কবলে পড়ে। ধরলা নদীর ভাঙনে তার লাশ বের হলে গত শনিবার এলাকাবাসী তা দেখতে পায়। পড়ে সেখান থেকে কাফন পরা অক্ষত অবস্থায় ছয়ফলের লাশ উদ্ধার করে গতকাল পরিবারের সম্মতিতে সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব-ধনীরাম গ্রামের তোফাজ্জল মেম্বারের বাড়ির পাশে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে পুনরায় দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বড়ভিটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন সরকার ও স্থানীয় পূর্ব বড়লই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোজাম্মেল হকসহ অনেকে জানান, মৃত ব্যক্তি জীবদ্দশায় ভালো গুণের অধিকারী থাকায় হয়তো দীর্ঘদিন পরেও তার লাশটি নষ্ট হয়নি।

সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': মুলায়ম সিং যাদবের দাবি: তৃতীয় ফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত হবেন ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী:


দৈনিক আজিজ:
'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':
মুলায়ম সিং যাদবের দাবি:
তৃতীয় ফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত হবেন ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী:

ভারতের সমাজবাদী পার্টির (এসপি) প্রধান মুলায়ম সিং যাদব বলেছেন, ভারতের পরবর্তী সরকার গড়বে তৃতীয় ফ্রন্ট। প্রধানমন্ত্রীও হবেন এই ফ্রন্ট থেকে। তিনি বলেন, লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই গঠিত হবে তৃতীয় ফ্রন্ট। এই লক্ষ্যে তিনি বামদলগুলোর সঙ্গে কথা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান মুলায়ম।
আজ সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।
ভারতের পরবর্তী সংসদ বা লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে। কিন্তু ইতিমধ্যে বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী প্রচারণা। তবে কোন দল ক্ষমতায় যাবে, তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। যদিও কংগ্রেস ও বিজেপি জোট মনে করছে তারাই এবার ক্ষমতায় যাবে, কিন্তু ভারতের বিভিন্ন জনসমীক্ষায় বলা হয়েছে, বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ বা কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের এবার সরকার গড়ার মতো আসন পাওয়া কঠিন হবে। বরং এবারও আঞ্চলিক দলের প্রাধান্য থাকবে।
এদিকে মুলায়ম সিং যাদবের ওই দাবির পর সংযুক্ত জনতা দলের (জেডিইউ) সভাপতি শারদ যাদব বলেছেন, তৃতীয় ফ্রন্ট হলে স্বাগত জানাব। আর সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, তৃতীয় বিকল্প শক্তি গড়ার জন্য ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর সঙ্গে তাঁরাও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে বিজেপির নেতা বলবীর পুঞ্জ বলেছেন, দিবাস্বপ্ন দেখছেন মুলায়ম সিং যাদব।

রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : কাদের সিদ্দিকী


দৈনিক আজিজ:
'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':
শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : কাদের সিদ্দিকী

 : বাগেরহাটে বিকল্পধারার কর্মী সমাবেশে দলের প্রেসিডেন্ট সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসর বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করছে। তাই এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নিজেদের মতো করে সংবিধান সংশোধন করেছে আবার এই দেশকে ভারতের অধীনে দিতে রামপালের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। তিনি এই সরকারের সকল  কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। 
এই কর্মী সমাবেশে বিশেষ অতিথি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম) বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ছেলের কাছে খবর আছে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে আর আমার কাছে খবর আছে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০/৪০টি আসনের বেশি পাবে না। তাই তারা নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা করছে। বাংলাদেশে একটি ছাগলের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে, তবে শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। 
গতকাল দুপুরে বাগেরহাটের স্বাধীনতা উদ্যানে বাগেরহাট জেলা বিকল্পধারার কর্মী সমাবেশে প্রধান ও বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় প্রফেসর বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী এ কথা বলেন। বাগেরহাট জেলা বিকল্পধারার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব বেগ মাহাতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের  কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, মহিলাধারার সভানেত্রী এ্যানজেল মৃধা, জেলা যুবধারার সভাপতি বেল্লাল হোসেন প্রমুখ। 

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': রুলের প্রতিবাদে আইনজীবিদের বিক্ষোভ ট্রাইব্যুনাল ও বিচারকদের সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি -খন্দকার মাহবুব হোসেন


দৈনিক আজিজ:
'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':
রুলের প্রতিবাদে আইনজীবিদের বিক্ষোভ
ট্রাইব্যুনাল ও বিচারকদের সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি -খন্দকার মাহবুব হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার : ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে করা মন্তব্যে বিচারকদের সম্পর্কে কোন কিছু বলা হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। কেননা বিচারক কোন মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন না। তিনি থাকেন নিরপেক্ষ। তিনি বলেছেন যদি আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয় বা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া হয় তবে এর জন্য যারা দায়ী তাদের বিচার হওয়া উচিত। তা না হলে দেশে আইনের শাসন থাকবে না এবং কারো সাংবিধানিক নিরাপত্তা থাকবে না।

গতকাল রোববার বেলা পৌনে ১টায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আমি ট্রাইব্যুনাল এবং বিচারকদের সম্পর্কে কোন মন্তব্য করি নাই। আমার বক্তব্য বিকৃত করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আদালতে আমার বক্তব্য কারো প্রতি হুমকি নয়। এটি একটি রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ও আইনগত বাধ্যবাধকতা।

সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের দু’বারের নির্বাচিত সভাপতি ও জনপ্রিয় আইনজীবী এই নেতা বলেন, বিচারক কোন মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন না। তিনি থাকেন নিরপেক্ষ। মামলার বাদী, বিবাদী এবং যারা সাক্ষী দেন তারাই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন। বিচারক মামলার সাক্ষী প্রমাণ শুনে তা পর্যালোচনা করে রায় দেন। তার রায় বাদীপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সাক্ষী প্রমাণের ওপর নির্ভর করে। আমাদের দ-বিধি আইনেও আদালতে মিথ্যা মামলা এবং সাক্ষী দেয়া দ-নীয় অপরাধ। তাই ভবিষ্যতে যদি দেখা যায় মিথ্যা মামলা তৈরি করে এবং মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে ট্রাইব্যুনালে কাউকে সাজা দেয়া হয়েছে তবে অবশ্যই আইনত তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

এদিকে সিনিয়র আইনজীবী ও বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেনের  বিরুদ্ধে দেয়া রুলের প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে মিছিল করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। খন্দকার মাহবুব হোসেনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের রুল জারির পরপরই মিছিল করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোঃ শাহজাদা, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ শতাধিক আইনজীবী। 

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল যে রুল দিয়েছে তা অবৈধ ও পক্ষপাতদুষ্ট।

এ রুলের বিরোধিতা করে তারা বলেন, আমরা এ রুল মানি না মানব না। অবৈধ রুল বাতিল কর, করতে হবে। খন্দকার মাহবুবের বিরুদ্ধে দায়ের করা রুল বাতিল না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে তারা ঘোষণা দেন।

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': :জামায়াত ধর্ম বিরোধী: সৈয়দ হায়দার মউদুদী:


দৈনিক আজিজ:
'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':
:জামায়াত ধর্ম বিরোধী: সৈয়দ হায়দার মউদুদী:

একাত্তরে গণহত্যা, নির্যাতনের জন্য জামায়াতে ইসলামের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা আবুল আলা মওদুদীর পুত্র সৈয়দ হায়দার ফারুক মওদুদী। এ দেশে ‘জামায়াতে ইসলামি' নামের রাজনৈতিক দলটির কোন রাজনীতি করার অধিকার নেই, এমনও বলেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘গণহত্যার এই অভিযোগ কোনভাবেই অস্বীকার করতে পারবে না জামায়াত। নেতারা তাদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা না চাওয়ার কারণে দলের তরুণ কর্মীরা বিপাকে পড়েছে। তারা কোনদিকে যাবে তা তারা বুঝতে পারছে না।'
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে ধর্মের প্রভাব নিয়ে এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নিতে সৈয়দ হায়দার মওদুদী এখন বাংলাদেশে। রবিবার তিনি স্থানীয় একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবীর।
হায়দার মওদুদী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাচালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় শাখার প্রধান জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী একবার পাকিস্তানে তাদের বাসায় গিয়েছিলেন। এ সময় তিনি বাঙালিদের দমনে আলবদর বাহিনী গঠন এবং তাদের প্রশিক্ষণের কথা স্বীকার করেন।
মওদুদীর ছেলে বলেন, আলবদর বাহিনীর সাথে জামায়াতের সম্পর্ক অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কারণ এই বাহিনীর আঞ্চলিক প্রধান ছিলেন মতিউর রহমান নিজামী। মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় তিনি একবারে ১৫ জন বাঙালিকে হত্যা করার কথা জানিয়েছিলেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।  তার ওপরে ছিলেন জামায়াতের একজন নায়েবে আমির। এরপরও জামায়াতের এই কথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
মওদুদীর ছেলে আরো বলেন, "অপরাধ স্বীকার করে জামায়াতের ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। তারা বলতে পারে, আমাদের নেতারা যা করেছে তা ভুল করেছে। আমরা এর জন্য ক্ষমা চাই। নইলে দলের তরুণরা কোনদিকে যাবে? তারা না পারছে এইদিকে থাকতে না পারছে ওদিকে যেতে।"
সৈয়দ হায়দার মওদুদী বুধবার বাংলাদেশে আসার পর থেকেই আলোচনার খোরাক হয়েছেন তিনি। বাংলাদেশে জামায়াতের রাজনীতি করার অধিকার নেই-এমন বক্তব্য দেয়ার পর থেকে জামায়াতের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও তোরা হচ্ছে। মওদুদীর সম্পত্তির লোভে তিনি দলটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, এমন কথাও ছড়াচ্ছে জামায়াত। এরও জবাব দেন মওদুদীর ছেলে। তিনি বলেন, "জামায়াত কোন অধিকারে এসব কথা বলে। আমি কি তাদের সাথে কোনো কথা বলেছি নাকি বাংলাদেশ জামায়াতের সাথে কোনো যোগাযোগ করেছি। আর আমার বাবার সম্পত্তিতে তো আমাদেরই অধিকার আছে। জামায়াতের তো নাই।"
মওদুদীর ছেলে হয়েও জামায়াতে যোগ দেননি হায়দার মওদুদী। কেবল তিনি না, তার নয় ভাইয়ের কাউকে জামায়াতের রাজনীতিতে জড়াতে দেননি মওদুদী। তিনি জানান, কেবল রাজনীতি না, জামায়াতের কোনো বইপত্র পড়তে দেননি তাঁর বাবা।
সৈয়দ হায়দার মওদুদী জানান, জামায়াত প্রতিষ্ঠার আগে ভারতে প্রখ্যাত মুসলিম নেতা আবুল কালাম আযাদের সঙ্গে তার বাবার কথা হয়েছিল। জামায়াতের গঠনতন্ত্র এবং উদ্দেশ্য পড়ে আযাদ তাঁকে এমন কোনো দল গড়তে নিষেধ করেছিলেন। এ ধরনের দল হলে সব সাম্প্রদায়িক শক্তি এতে ভিড় করবে বলেও হুঁশিয়ার দিয়েছিলেন তিনি। হায়দার মওদুদী বলেন, আবুল কালাম আযাদের ভবিষ্যতবাণী সত্য হয়েছে।
হায়দার মওদুদী বলেন, ‘কেউ জামায়াতের বিরোধীতা করলেই তাকে অমুসলিক-কাফের বলে তারা। কিন্তু ইসলামের নামে এভাবে বিভক্তি করা কোনো মুসলমান করতে পারে না।'
তিনি আরো বলেন, "মুসলিম লীগ বলতো কেবল তারাই মুসলমান। জামায়াতও তাই করে। এটা কেমন কথা। এরা ইসলামের নামে এভাবে বিভক্তি করে ইসলামের ক্ষতি করছে। মহানবী (সা.) এর দল একটিই। কোনো ইসলামী দল একে ভাগ করতে পারে না।"
মওদুদীর ছেলে বলেন, "ইসলামের নামেই জামায়াত সব অপকর্ম করেছে। তারা আল্লাহু আকবার বলেই মুসলমানদের হত্যা করেছে। এটা কেমন কথা? আল্লাহ্ তো বলেছেন হত্যা করা গুরুতর অপরাধ। এখন তো এই অপরাধের বিচার হচ্ছে। এর বিরোধীতা করাও উচিত না কারও।"

শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': একক নির্বাচন ঠেকাতে সংগ্রাম কমিটি গড়ুন: খালেদা


দৈনিক আজিজ:
'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':
একক নির্বাচন ঠেকাতে সংগ্রাম কমিটি গড়ুন: খালেদা

বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের চেষ্টা প্রতিহত করতে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক প্রতিরোধ কমিটি গঠনের ডাক দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

সিলেটে শনিবারের জনসভায় তিনি নির্দলীয় সরকারের দাবি আবার জানিয়ে বলেছেন, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে শুরু হওয়া ১৮ দলের এই জনসভায় বিকালে দেয়া বক্তব্যে আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকারকে হুঁশিয়ার করেন বিরোধীদলীয় নেতা।

খালেদা জিয়া দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আওয়ামী লীগের একক নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য কেন্দ্রভিত্তিক সংগ্রাম কমিটি গঠন করতে হবে। জনগণকে নিয়ে এই কমিটি করতে হবে। আমি এখন থেকে সংগ্রাম কমিটি গঠনের নির্দেশ দিচ্ছি।”

সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিদেশিদের চাওয়ার কথা তুলে ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “এককভাবে নির্বাচন করলে সেটা কোথাও গ্রহণযোগ্য হবে না। এককভাবে নির্বাচন করতে দেয়া হবে না।”

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের ফলে আওয়ামী লীগের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন হবে এবং তা আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।    

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন বয়কটের হুমকি দিয়ে আসছে বিএনপি। এর প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি না এলেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।

সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগকে ২০০৭ সালের কথা স্মরণ করিয়ে দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

সংবিধান অনুসরণ করে আপনি তখন বিচারপতি কে এম হাসানের অধীনে নির্বাচনে রাজি হলেন না কেন? আপনি তো আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, আপনার অধীনে নির্বাচন কীভাবে হবে?”

“এজন্যই আপনার (শেখ হাসিনা) অধীনে নির্বাচন হবে না। যতই চিৎকার করেন না কেন, আপনাকে বিদায় নিতেই হবে।”

২৪ অক্টোবরের পর জোরদার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “২৪ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সময় শেষ। এ সময়ের মধ্যে নির্দলীয় সরকারের দাবি না মানলে ২৫ অক্টোবর থেকে আমরা আন্দোলন শুরু করব।”

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, “আপনার দলের অনেকে এখন বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। অনেকে পকেটে টিকিট কেটে ওপেন ভিসা নিয়ে ঘুরছে। সংগ্রাম কমিটি হলে আপনি দেখবেন- আপনার বায়ে, ডানে, সামনে, পেছনে কেউ নেই। তখন কেবল আমরাই থাকব।”

বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলেও প্রতিহিংসাপরায়ণ না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “আমরা আপনাকে সম্মানের সঙ্গে রাখব। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।

সরকারি কর্মকর্তাদেরও দল নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “কারো চাকরি খাওয়া হবে না। আপনারা দেশ ও মানুষের কথা চিন্তা করেন। অন্যায়ভাবে জনগণের ওপর গুলি চালাবেন না।”

“তাই এখনো বলছি, আপনি (শেখ হাসিনা) সংসদে নির্দলীয় সরকারের বিল এনে পাস করুন। যতদিন মেয়াদ আছে, আপনারা থাকুন। তবে একক নির্বাচন হলে রাজপথে দেখা হবে,” হুঁশিয়ারি দেন খালেদা জিয়া।

ঈদের পর নির্দলীয় সরকারের আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণার আগে গণসংযোগের অংশ হিসেবে সিলেটে এই জনসভা করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এর আগে নরসিংদী, রংপুর, রাজশাহী ও খুলনায় জনসভা করেন তিনি।

ঢাকা থেকে শুক্রবার রওনা হয়ে সিলেটে পৌঁছে রাতে সার্কিট হাউজে ছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা। দুপুরে হজরত শাহজালাল ও হজরত শাহ পরানের মাজার জিয়ারত করে বেলা ৩টায় জনসভাস্থলে আসেন তিনি।

৫০ মিনিটে বক্তব্যে সরকারের ‘দুর্নীতি-দলীয়করণের’ সমালোচনার পাশাপাশি বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কী কী করবে, তাও বলেন খালেদা জিয়া।

বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে তিনি বলেন, “সরকার প্রশাসন, বিচার বিভাগ সব কিছু দলীয়করণ করে ফেলেছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন হলে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। কারণ ডিসি, এসপি, টিএনও, ওসি সবাই প্রধানমন্ত্রীর কথামতো কাজ করবে।

“নির্দলীয় সরকার ছাড়া সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হবে না। নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে হলে দুই পক্ষের জন্য নির্বাচনের মাঠ মসৃণ হতে হবে। উঁচু-নিচু হলে চলবে না।”

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, “বর্তমান ইসি সরকারের আজ্ঞাবহ ও মেরুদণ্ডহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তারা শুধু ‘জি স্যার’, ‘জি স্যার’, ‘জি স্যার’ করেন। তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।”

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে দুপুর ১২টায় সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি এম এ হকের সভাপতিত্বে কোরআন তেলওয়াতের মধ্য দিয়ে জনসভা শুরু হয়।

খালেদা জিয়া যখন সভাস্থলে পৌঁছান, তখন কানায় কানায় ভরা আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানানো হয়।

১৮ দলের এই জনসভার আগে সকাল থেকে জামায়াত-শিবির ও জমিয়তে উলামা ইসলামের নেতা-কর্মীদের ব্যাপক মহড়া দেখা যায়। জনসভাস্থলে তাদের একের পর এক মিছিল আসছিল।

দুপুরের পর বিএনপি ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের মিছিল আসতে থাকে। বেলা দেড়টার দিকে ছাত্রদলের মিছিল এলে বসা নিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরকর্মীদের সঙ্গে তাদের মারামারি বাঁধে, পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

সিলেটের এই জনসভায় মাঠের চারপাশে ছিল এম ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে তার ছবি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার। নিখোঁজ বিএনপি নেতার ছোট মেয়ে সাইয়ারা নাওয়ালের ছবি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানারে আকুতি ছিল- ‘আমার আব্বুকে ফিরিয়ে দাও’।

দেড় বছর আগে ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী।

জনসভায় বক্তব্যে খালেদা জিয়াসহ সব নেতারাই ইলিয়াস আলীকে স্মরণ করেন। খালেদা জিয়া বলেন, টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধিতা করায় বিরোধী দলের এই নেতাকে ‘গুম’ করা হয়েছে। 

ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনাও জনসভায় বক্তব্য রাখেন।

সিলেটের নেতা ও অর্থমন্ত্রী প্রয়াত এম সাইফুর রহমান ছবি সম্বলিত ব্যানারও ছিল জনসভায়। গত ৫ জুন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নামেও ব্যানার ছিল।

কর্দমাক্ত মাঠ ছাড়িয়ে জনসভার বিস্তার উত্তর পাশে আম্বরখানা সড়ক, দক্ষিণে জিন্দাবাজার সড়ক,  পুরাতন মেডিকেল কলেজ সড়ক, পশ্চিমে রিকাবি বাজার ভিআইপি সড়ক, পূর্বে চৌহাট্টা মীরবক্সটোলা সড়কে ছড়িয়ে যায়।

সিলেটের ১২টি উপজেলা ছাড়াও সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ থেকেও বাস-ট্রাকে করে হাজার হাজার নেতা-কর্মী এই জনসভায় যোগ দেয়।

খালেদা জিয়ার আগমন ঘিরে সার্কিট হাউজ থেকে মাঠ এলাকাসহ গোটা মহানগরীতে নির্মাণ করা হয় কয়েকশ’ তোরণ। সারি সরি রঙিন পতাকা দিয়ে সড়কের দুই পাশ সাজানো হয়।

জনসভায় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, সাদেক হোসেন খোকা, শমসের মবিন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, ওসমান ফারুক, শামসুজ্জামান দুদু, আমানউল্লাহ আমান, বরকতউল্লাহ বুলু, মাহবুবউদ্দিন খোকন, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাখাওয়াত হোসেন জীবন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, শাম্মী আখতার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মীর সরফত আলী সপু, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।

১৮ দলের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এলডিপি সভাপতি অলি আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদের সাংসদ আ ন ম শামসুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের আমির আবদুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিশের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইসহাক, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জমিয়তে উলামা ইসলামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শাহীনুর পাশা চৌধুরী, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, মুসলিম লীগের সভাপতি এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান প্রমুখ।

সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হাসান কয়েস, সিনিয়র সহসভাপতি দিলদার হোসেন সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আহমেদ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, মৌলভীবাজারের সভাপতি এম নাসের রহমান, সুনামগঞ্জের সভাপতি ফজলুল হক আসপিয়া, হবিগঞ্জের সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়সল জনসভায় বক্তব্য দেন।

সিলেটের জামায়াত নেতা সায়েফ আহমেদ, আনোয়ার হোসাইন, হাবিবুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা ফয়জুল হক জালালাবাদী, খেলাফত মজলিশের নেতা হাজী নুরুজ্জামান, জমিয়তে উলামা ইসলামের নেতা মনসুরুল হাসান রায়পুরী, জিয়াউদ্দিন, জাগপা নেতা মকসুদ আহমেদও জনসভায় বক্তব্য দেন।

শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': চাঁদা না দেয়ায় গোবিন্দগঞ্জে বিয়ে বাড়িতে হামলা, নিহত ১


দৈনিক আজিজ:
'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':
চাঁদা না দেয়ায় গোবিন্দগঞ্জে বিয়ে বাড়িতে হামলা, নিহত ১

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চাঁদা না দেয়ায় আজ শুক্রবার একদল দুর্বৃত্ত বিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে মঞ্জু মিয়া (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। নিহত মঞ্জু মিয়া উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ছোট সোহাগী গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় দুই নারীসহ আরো পাঁচজন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত রফিকুল ইসলাম (৩২), রোকেয়া বেগম (৫০), শাবানা বেগম (৩০), শরিকুল ইসলাম (২৫) ও নূরুল আলম (৩০) কে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ছোট সোহাগী গ্রামের ধলু মিয়ার মেয়ে আলেফা বেগমের (২০) সম্প্রতি ঢাকার আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ছেলের সাথে বিয়ে হয়। এই বিয়েতে স্থানীয় 'সোহাগী ইউনিটি' নামীয় ক্লাবের সদস্যরা ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। ধলু মিয়া চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে তারা গত রবিবার আলেফার স্বামী আব্দুর রাজ্জাককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ক্লাবে আটকে রাখে। পরে আট হাজার টাকার চাঁদার বিনিময়ে আবদুর রাজ্জাককে ছাড়িয়ে আনা হয়। পরবর্তীতে আজ সকালে আবারো 'সোহাগী ইউনিটি' নামীয় ক্লাবের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাকী টাকা আদায়ের জন্য ধলু মিয়ার বাড়ি ঘেরাও করে। একপর্যায়ে তার ভাতিজা শরীফুল ইসলামকে (৩০) তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তাকে উদ্ধারে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে এলে তাদেরকে এলোপাথাড়ি কোপায় 'সোহাগী ইউনিটি' নামীয় ক্লাবের সদস্যরা। এতে ছয়জন আহত হন। আহতদের হাসপাতালে নেয়ার পথে ধলু মিয়ার ভাতিজা মঞ্জু মিয়া মারা যান।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, পুলিশ লাশ উদ্ধার ও ঘটনা তদন্তে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।

বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':খন্দকার মাহবুবের বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ

খন্দকার মাহবুবের বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ


প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বৃহস্পতিবার বিচারপতি এটিমএম ফজলে কবীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ এ এই আবেদন করেন।
এ বিষয়ে আদেশের জন্য রোববার দিন রেখেছেন বিচারক।
খন্দকার মাহবুব হোসেনের বিরুদ্ধে কেন অদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না এবং কেন তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে তার মন্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হবে না- তা জানতে নির্দেশ চাওয়া হয়েছে প্রসিকিউশনের আবেদনে।
হত্যা, গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের নয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। 
এরপর সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিক্রিয়া জানায় বিএনপির আইনজীবী নেতারা।
khondokar mahbub.pngবিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহাবুব হোসেন বলেন,  “এই বিচারটি একটি প্রহসনের বিচার, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিচার। ইনশাল্লাহ জাতীয়তাবাদী শক্তি যদি ক্ষমতায় আসে, সত্যিকার অর্থে যারা যুদ্ধাপরাধী, তাদের বিচার হবে এবং নির্দোষ ব্যক্তিরা প্রতিহিংসার জন্য যাদের বিচার করা হয়েছে, কাল্পনিক গল্প দিয়ে যে মামলা তৈরি করা হয়েছে, অবশ্যই সেটা চলে যাবে। যারা এই প্রহসনের বিচারে সম্পৃক্ত ছিল, ইনশাল্লাহ বাংলার মাটিতে তাদেরও বিচার হবে।”
চিফ প্রসিকউটর গোলাম আরিফ টিপু বুধবার মাহবুব হোসেনের মন্তব্যের বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের নজরে আনা হলে বিচারক লিখিতভাবে আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিলের নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে আবেদন জমা দিয়ে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, “একজন আইনজীবী এ রকম মন্তব্য করায় জনমনে ট্রাইব্যুনালের কার্যকম নিয়ে অনাস্থা ও বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হবে।”
এ কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের ১১ (৪) ধারা অনুযায়ী খন্দকার মাহবুব হোসেনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ: 'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': ‘সেই মাহবুব এখন ঘাতকদের পক্ষে'


দৈনিক আজিজ:
'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন'
‘সেই মাহবুব এখন ঘাতকদের পক্ষে’

স্বাধীনতার পর পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তাকারী বাঙালিদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে খন্দকার মাহবুব হোসেনের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তার এখনকার তৎপরতার সমালোচনা করেছেন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের সমালোচনাকারী মাহবুবের প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “১৯৭২ সালে কোলাবরেটর আইনে যখন বিচার চলছিল, তখন ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনালে বিশেষ পিপির দায়িত্ব পালন করেন মাহবুব হোসেন। এখন সেই ঘাতকদের পক্ষ নিয়ে তিনি কথা বলছেন।”

মুক্তিযুদ্ধের পর শুরু হওয়া বিচার কার্যক্রম বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে থেমে যায়। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭৩ সালের আইন সংশোধন করে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করেছে।

এই পর্যন্ত রায়ে জামায়াতে ইসলামীর পাঁচ শীর্ষনেতার সাজা হয়েছে, এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ড হয়েছে চারজনের। সপ্তম রায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল।   

বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব হোসেন যুদ্ধাপরাধের বর্তমান বিচারের সমালোচনা করে আসছেন।  

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মাহবুব হোসেন মঙ্গলবার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের পর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিচারক ও বিচার সংশ্লিষ্টদের বিচারের হুমকিও দেন।

তিনি বলেন, “এই বিচারটি একটি প্রহসনের বিচার, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিচার।যারা এই প্রহসনের বিচারে সম্পৃক্ত ছিল, ইনশাল্লাহ বাংলার মাটিতে তাদেরও বিচার হবে।”

তার ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কামরুল বলেন, “বিচারক ও বিচার সংশ্লিষ্টদের বিচারের হুমকি দেয়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বড় অন্তরায়। তার (মাহবুব হোসেন) এই হুমকি আদালত অবমাননার সামিল।”

বর্তমানে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের এই নেতা এই বক্তব্যের মাধ্যমে ‘পেশাগত নৈতিকতা’ লঙ্ঘন করেছেন বলে মনে করেন অ্যাডভোকেট কামরুল।

মাহবুব হোসেনের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায়, আদালত সেই চিন্তা করবে, আমরা সেই অপেক্ষায় আছি।”

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে মঙ্গলবার দেয়া রায় আইন মন্ত্রণালয়ের তৈরি এবং তা আগেই ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে গণহত্যায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সালাউদ্দিন কাদেরের পরিবার ও বিএনপি।  

কথিত রায় ফাঁসের সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কোনো কিছু হলে সেখান (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) থেকে হতে পারে।”

খসড়া রায় ফাঁসের তথ্য জানিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিবন্ধক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান তিনি।

“এর সঙ্গে কারা জড়িত তা অনুমান করা গেলেও তদন্ত করে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে।”

দৈনিক আজিজ:'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': রায় গ্রহণযোগ্য নয়,কাল দেশজুড়ে বিক্ষোভ : বিএনপি


দৈনিক আজিজ:'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':
রায় গ্রহণযোগ্য নয়,কাল দেশজুড়ে বিক্ষোভ : বিএনপি

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। 

বিএনপি বলেছে, এই রায়ে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী সুবিচার পাননি, আমরা এ রায়ে বিস্মিত। এটা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার হীন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করা এবং সুপরিকল্পিতভাবে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসে সরকারি অপচেষ্টার প্রতিবাদে কাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে কেন্দ্রিয়ভাবে বিকাল ৩টায় রাজধানীর সোহরওয়ার্দী উদ্যানে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হবে।

আজ বুধবার বিকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এমকে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা বিস্মিত। এই ট্রাইব্যুনাল গঠন ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে দেশে ও বিদেশে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিএনপি সব সময়ে বলে আসছে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হতে হবে স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানের। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিমূর্ল করতে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। স্কাইপে কেলেঙ্কারি ও রায় ফাঁস হওয়াতে এই রায় জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর এভাবে রায় দেওয়ার ঘটনা বিশ্বে নজিরবিহীন। রায় ফাঁসের ঘটনা স্বয়ং আইনমন্ত্রী নিজে স্বীকার করে তা তদন্তের কথা বলেছেন আর ট্রাইব্যুনালের রেজিস্টার শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছে।

ফখরুল বলেন, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে দুইজন বিশিষ্ট ব্যক্তি স্বাক্ষ্য দিতে চাইলেও, পারেনি। একজন সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি তার পক্ষে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিত অনুমতি চাইলেও তিনি সাক্ষ্য দিতে পারেননি। এছাড়া একজন সাক্ষী হলফ করে বলেছেন, ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ সালাহউদ্দিন চৌধুরী দেশ ত্যাগ করে পাকিস্তানে যান এবং সে বছর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত লন্ডনে ছিলেন। আর যে নয়টি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তা ১৩ এপ্রিল থেকে ২২ জুলাইর মধ্যে সংঘঠিত হয়/

দৈনিক আজিজ:'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন': বিচারের সাথে সম্পৃক্তদের বিচার করা হবে::খন্দকার


দৈনিক আজিজ:'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন':
বিচারের সাথে সম্পৃক্তদের বিচার করা হবে::খন্দকার 
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার একটি প্রহসনের বিচার, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিচার। ভবিষ্যতে যদি প্রমাণ হয়, অন্যায়ভাবে বা সরকারের সঙ্গে কোন যোগসাজসে বা কোন প্রলোভোনে এই বিচার করা হয়েছে হা হলে এই সঙ্গে যুক্ত যারা তাদের ও বিচার করা হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড প্রদানের পর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রেস-ব্রিফিংয়ে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। 

খন্দকার মাহবুব বলেন, ইনশাল্লাহ জাতীয়তাবাদী শক্তি যদি ক্ষমতায় আসে, সত্যিকার অর্থে যারা যুদ্ধাপরাধী, তাদের বিচার হবে এবং নির্দোষ ব্যক্তিরা প্রতিহিংসার জন্য যাদের বিচার করা হয়েছে, কাল্পনিক গল্প দিয়ে যে মামলা তৈরি করা হয়েছে, অবশ্যই সেটা চলে যাবে। 

তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বার বার বলে এসেছি যে, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে সেটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিফলন হবে সে বিচারে। আমরা দেখতে পাচ্ছি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ন্যায় ব্যক্তি, যার পিতা '৭২ সালে সেন্ট্রাল জেলে দালাল আইনে আটক ছিলেন। তখন তার (সালাহউদ্দিন) নাম ছিল না। দীর্ঘ ৪০ বছর পর তাকে এই মামলায় আসামি করা হয়। তিনি বলেন, যারা তত্কালীন পশ্চিম পাকিস্তানে লেখাপড়া করেছেন, তাদেরই একজন বর্তমানে যিনি একজন বিচারপতি, তাকে সালাহউদ্দিনের পক্ষে সাফাই সাক্ষী দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল। ওই বিচারপতিরও আগ্রহ ছিল সত্য কথা ট্রাইব্যুনালে বলার জন্য যে, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সময় পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন। কিন্তু তাকেও সাক্ষ্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। এই কারণেই আমরা বলতে চাই, এই বিচারটি একটি প্রহসনের বিচার, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিচার। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। তবে সেই বিচার হতে হবে স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমান সম্পন্ন। বাদী ও অভিযুক্ত উভয়পক্ষের অধিকারকে সমুন্নত রেখে বিচার করতে হবে। কিন্তু সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে সাফাই সাক্ষীকে সুযোগ না দিয়ে তার অধিকারকে ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা ন্যায় বিচারের পক্ষে। বিচার এমন হতে হবে, যেন দেশে-বিদেশে এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন উত্থাপিত না হয়। আমরা মনে করি এই মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জার্িতক আইন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করা হয়নি। এই রায়ের বিরুদ্ধে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী আপিল করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। আশাকরি আপিলে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।

সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, আমরা আশাকরি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হবে। পদ্ধতিগত যে সব ভুল ছিল সেগুলো উচ্চ আদালত দেখবে। আপিলে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী খালাস পাবেন। 

এসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী ও সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন এমপি, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০১৩

দৈনিক আজিজ:'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন' সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ


দৈনিক আজিজ:
'বিশ্ব সংবাদ পড়ছি 'রমেশ পাইন'
সালাহউদ্দিন  কাদের চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরে নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন। একাত্তরে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় তার বিরুদ্ধে আনা ২৩ টি অভিযোগের মধ্যে হত্যা, গণহত্যাসহ নয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, আটটি অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এছাড়া ছয়টি অভিযোগে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেছেন, অভিযোগ সংগঠিত হওয়ার সময়ে তিনি পাকিস্তানে ছিলেন; দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিকের দেয়া এমন সাক্ষ্য আমলে নেয়নি ট্রাইব্যুনাল। 

রায় ঘোষণার পর এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, নতুন চন্দ্রসিংহ হত্যাকাণ্ডসহ অভিযোগ চারটিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। তিনটি অভিযোগে ২০ বছর করে কারাদণ্ড, দুইটি অভিযোগে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হিন্দুদের উপর নির্যাতন ও গণহত্যার দায়ে তার এ শাস্তি ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল।

যে নয়টি অভিযোগে সালাহউদ্দিন কাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সেগুলো হলো- ২ নম্বর অভিযোগ মধ্য গহিরায় গণহত্যা, ৩ নম্বর অভিযোগ নূতন চন্দ্র হিংস হত্যা, ৪ নম্বর অভিযোগ জগত্মলল পাড়া গণহত্যা, ৫ নম্বর অভিযোগ সুলতানপুরে নেপাল চন্দ্র ও অপর তিনজনকে হত্যা, ৬ নম্বর অভিযোগ ৬৯ পাড়া গণহত্যা, ৭ নম্বর অভিযোগ সতিশ চন্দ্র পালিত হত্যা, ৮ নম্বর, ১৭ নম্বর অভিযোগ নিজাম উদ্দিন আহম্মদকে অপহরণ ও নির্যাতন এবং ১৮ নম্বর অভিযোগ সালেহউদ্দিন আহমদকে অপহরণ ও নির্যাতন।

যে আটটি অভিযোগ থেকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে খালাস দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো- ১ নম্বর অভিযোগ গুডস হিলে সাতজনকে অপহরণ ও নির্যাতন করে, ১০ নম্বর অভিযোগ মানিক ধরের বাড়ি লুট, ১১ নম্বর অভিযোগ বোয়াল খালী গণহত্যা, অভিযোগ মোজাফফর ও তার ছেলে শেখ আলমগীর হত্যা, ১২ নম্বর অভিযোগ বিজয়কৃষ্ণ ও দুইজনকে হত্যা, ১৪ নম্বর অভিযোগ হানিফ হত্যা, ১৯ নম্বর অভিযোগ মাহবুব আলম হত্যা, ২০ নম্বর অভিযোগ এখলাস হত্যা এবং ২৩ নম্বর অভিযোগ সলিমুল্লাহর উপর নির্যাতন। যে ছয়টি অভিযোগের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করেননি সেগুলো হলো- ৯, ১৩, ১৫, ১৬, ২১ এবং ২২।

রায় ঘোষণা উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বিএনপির এই নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে নেয়া হয়। এ সময় অন্যান্য দিনের চেয়ে তাকে বেশ বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।

গত ১৪ আগস্ট মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া শেষে সালাহউদ্দিন কাদেরের রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ রাখে ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্রপক্ষ একাত্তরে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্মান্তরে বাধ্য করাসহ ১৭ টি অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী হাজির করে। সাক্ষীদের দাবি কোন কোন ঘটনা তার উপস্থিতিতে এবং নির্দেশে সংঘটিত হয়েছে। অন্যদিকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে বলেছেন, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওই সময়ে বাংলাদেশেই ছিলেন না। তিনি সে সময় লেখাপড়ার জন্য পাকিস্তানে ছিলেন। পাকিস্তানের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সহপাঠী সুপ্রিম কোর্টের বিচারক বিচারপতি শামীম হাসনাইনও প্রধান বিচারপতির কাছে লেখা এক চিঠিতে জানিয়েছিলেন, সালাহউদ্দিন কাদের ১৯৭১ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আগষ্ট মাস পর্যন্ত পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছিলেন। দুই পক্ষের এই পরস্পরবিরোধী দাবির মুখে আজ ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করল।

সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম গতকাল বলেন, এটি মিথ্যা মামলা। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ থেকে ১৯৭৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে ছিলেন না। এটা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। রাষ্ট্রপক্ষ জেরাকালে সালাহউদ্দিন কাদেরকে প্রশ্ন করেছিল, তিনি বেনামে ও বেআইনিভাবে ১৯৭৪ সালে দেশে এসেছিলেন। এ প্রশ্নের মাধ্যমে তারা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ১৯৭১ সালে সালাহউদ্দিন কাদের দেশে ছিলেন না। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তা নিজেই স্বীকার করেছেন ১৯৭১ সালে সালাহউদ্দিন কাদের বাংলাদেশে ছিলেন এ মর্মে তার কাছে কোনো দলিলপত্র নেই।

ফখরুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী গোপাল জবানবন্দীতে বলেছেন, তিনি সালাহউদ্দিন কাদেরকে দেখেছিলেন। কিন্তু জেরার জবাবে তিনি বলেছেন, ১৩ এপ্রিল ১৯৭১ সাল থেকে ২৮ এপ্রিল ভারত যাওয়ার পথে ২৭ এপ্রিল তিনি একবার মাত্র কুন্ডেশ্বরীতে গিয়েছিলেন। অতএব ১৩ এপ্রিল কুন্ডেশ্বরীতে সালাহউদ্দিন কাদেরকে দেখা একটা মিথ্যা। সাক্ষী রাষ্ট্রপক্ষের শেখানো মতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ধরনের সাক্ষীর উপর ভিত্তি করে কোনো সাজা হলে তা হবে ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। তিনি বলেন, আইন পরিবর্তন করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সালাহউদ্দিন কাদেরকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমরা আশা করি, এই মিথ্যা মামলা থেকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী বেকসুর খালাস পাবেন।

২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১১ সালের ১৭ জানুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ওই বছরের ১৪ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে ১৭ নভেম্বর তা আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।